কিশোরগঞ্জের ভৈরব

আমন ধানের বাজার চাঙা, কৃষকের স্বস্তি

এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি আমন ধানের দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অথচ গত বছরের এই সময়ে বর্তমান দরের চেয়ে মণপ্রতি কম ছিল ১৫০ টাকা। গতকাল কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মোকাম ঘাটে

কিশোরগঞ্জের ভৈরব মোকামে আমন ধানের আমদানি বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে বিক্রি ও দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অথচ গত বছরের এই সময়ে বর্তমান দরের চেয়ে মণপ্রতি কম ছিল ১৫০ টাকা। গতকাল শুক্রবার আমন (চিকন) বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। মোটার দর গেছে এক হাজার টাকায়। এক সপ্তাহ আগে উভয় ধানের দাম ছিল মণপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কম। আমন ধানের বাজার চাঙা হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে কৃষকের মধ্যে।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার একজন ধানের ব্যাপারী ইলিয়াস আলী। ৫০০ মণ আমন ধান নিয়ে তিনি গতকাল শুক্রবার ভৈরব মোকামে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর আনা ধান বিক্রি হয়ে যায়। বাজারদরে তিনি বেশ খুশি। ইলিয়াস বলেন, প্রতিবছর উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় দাম বাড়ছে না। ফলে কৃষক ধানের বিকল্পে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় আমনের বর্তমান বাজারদর ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এবার আমন কাটা শুরু হয়েছে নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। আবহাওয়া ছিল অনুকূলে। ফলে বাজারে আসা ধানের গুণগত মান বেশ। ভালো ধান হওয়ার পরও শুরুর দিকে বাজারে প্রত্যাশিত ক্রেতা ছিল না। সরকারি মূল্য নির্ধারণ হতে বিলম্ব হওয়ায় আমদানি বাড়লেও বাজারে ক্রেতার অভাব পড়ে। কয়েক দিন আগে সরকারি মূল্য ঘোষণা হয়। এবার ধানের মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি কেজি ২৮ টাকা। গত বছর মূল্য ছিল ২৭ টাকা। চালের মূল্য ৪২ টাকা। গত বছরের তুলনায় চালের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই টাকা। যদিও কৃষক সরকারি মূল্যে ধান দিতে আগ্রহী নন, তবু বাজারে এর প্রভাব আছে।

জামান মিয়া ভৈরবের একজন প্রতিষ্ঠিত ধান–চালের আড়তদার। গতকাল মোকামে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমনের দর বাড়ছে। হয়তো আরও কিছুটা বাড়বে। এই দর বজায় থাকলে কৃষক লাভবান হবেন।

গতকাল মোকামে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে আমন ধানের বস্তার স্তূপ। ব্যাপারী, ক্রেতা ও আড়তদারেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঘাটে আমনবোঝাই একাধিক নৌকা। নৌকাগুলো এসেছে হাওর উপজেলা হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের ইটনা ও মিঠামইন থেকে।

আমদানি হওয়া ধানের মধ্যে ব্রি-২২, ৩৯ ও ৪৯ জাতের ধান বেশি। এই মোকামের ধানের গন্তব্য ঢাকা, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থান। আজমিরীগঞ্জ থেকে আসা ব্যাপারী কুতুব মিয়া বলেন, দাম ওপরের দিকে থাকায় কৃষকেরা ধান কাটার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই কারণে তাঁরাও ধান বেশি পাচ্ছেন। দর পেয়ে কৃষকেরা যেমন খুশি, তাঁরাও খুশি। এই দর আর নিচের দিকে না গেলে কৃষকের মুখে শেষ পর্যন্ত খুশির আমেজ টিকে থাকবে। সরকারি মূল্য ঘোষণা হওয়ার পর বাজারে ধানের বিক্রি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন ভৈরব উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.