বাংলা আমার প্রণোদনা সম্মান ২০২৩ পেলেন আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলাম
আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলামের হাতে প্রণোদনা স্মারক তুলে দিচ্ছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি
ঢাকার আবৃত্তি সংগঠন বাংলা আমার প্রবর্তিত ‘বাংলা আমার প্রণোদনা’ সম্মান ২০২৩ পেলেন চট্টগ্রামের নন্দিত আবৃত্তিশিল্পী ও সংগঠক মো. মুজাহিদুল ইসলাম। প্রতিবছর দেশের আবৃত্তি অঙ্গণে বিশেষ অবদান রাখা তরুণ শিল্পীদের এ প্রণোদনা সম্মান প্রদান করা হয়ে থাকে।
গত ৬ জানুয়ারি শুক্রবার ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বাংলা আমার এর উৎসবে আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলামের হাতে এ প্রণোদনা স্মারক তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি। এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলা আমার সভাপতি মেহেদী হাসান আকাশ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদের আহ্বায়ক আবৃত্তিকার জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
মুজাহিদুল ইসলাম একজন আবৃত্তি অন্ত:প্রাণ সফল সংগঠক ও শিল্পী। প্রতিনিয়ত চট্টগ্রামের প্রায় সব মঞ্চে আবৃত্তিতে তিনি একজন পরিচিত মুখ। তাঁর আবৃত্তি প্রশংসিত হয়েছেন চট্টগ্রামসহ দেশের প্রায় বিভিন্ন জেলায়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সুদূর ভারতের রাজধানী দিল্লী, কোলকাতা, গুজরাট এবং ত্রিপুরাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আবৃত্তির মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এ শিল্পী।
ব্যক্তিগত আবৃত্তি চর্চার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সক্রিয় ও সমৃদ্ধ আবৃত্তি সংগঠন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। বাবা ডা. এম এ বশার ও মা রোকেয়া বেগমের জ্যেষ্ঠ সন্তান মো. মুজাহিদুল ইসলাম পেশাগত জীবনে চট্টগ্রাম জজ আদালতে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন।
তাঁর সংগঠন বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’ বিগত ১৭ বছরে নিজেদের মেধা আর দক্ষতা বলে দেশের অন্যতম সমৃদ্ধ ও সক্রিয় আবৃত্তি সংগঠনে পরিণত হয়। বিগত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস আবৃত্তির প্রশিক্ষণ, চর্চা, প্রযোজনা ও অনুষ্ঠান-উৎসব আয়োজনে নানাবিধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তারুণ্যের উচ্ছ্বাস দলগতভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি ভারতের চারটি রাজ্যে আবৃত্তি পরিবেশন করেও প্রশংশিত হয়েছে।
বেশ কিছু আবৃত্তি প্রযোজনার নির্দেশনাও দিয়েছেন মুজাহিদুল ইসলাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এসো নব সুন্দরের আলোকে, মানুষ জাগবে ফের, মশালের লাল ঐ জ্বলছে, সেই মিছিলের বর্নমালা, নবনবীনের জয়যাত্রা, মিছিল ইত্যাদি। এছাড়া নির্দেশনা দিয়েছেন পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ আবৃত্তি প্রযোজনার। এগুলো হলো পল্লীকবি জসীম উদ্দীন রচিত নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যনাট্যের শ্রুতিরূপ, দেশভাগ ভাষা আন্দেলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত প্রযোজনা জননী জন্মভূমি, কাজী নজরুল ইসলামের শ্রুতিনাটক ঝিলিমিলি, মায়ের প্রতি নিবেদিত কবিতা নিয়ে সমীপে মা, মুজিব শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত হে মহাসাগর। এই পাঁচটি প্রযোজনাই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মঞ্চস্থ হয়ে বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। এছাড়া তিনি একজন তরুণ আবৃত্তি প্রশিক্ষক হিসেবে নিজ সংগঠনের আবৃত্তি কর্মশালা এবং চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চারণ আবৃত্তি ও উপস্থাপনার প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন।
মুজাহিদুল ইসলাম তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রামের সর্বপ্রাচীন আবৃত্তি মোর্চা সম্মিলিত আবৃত্তি জোট চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিবের দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
শিল্পচর্চায় তার একাগ্রতার স্বীকৃতি স্বরুপ ভারতের দিল্লীভিত্তিক গবেষণাধর্মী সংগঠন “ভারতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক একাডেমি” ২০১৭ সালে আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলামকে ‘ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সাহিত্য সাংস্কৃতিক পুরষ্কার’ প্রদান করে।