চরের ‘সোনা’ ঘরে তুলছেন চাষিরা
ছবি: সংগৃহীত
জেগে ওঠা চর স্বপ্ন দেখাচ্ছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের নদীতীরবর্তী কৃষকদের। এই উপজেলার ফেনারবাক, ভীমখালী; জামালগঞ্জ সদর ও উত্তর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বালু মাটিতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা ভুট্টার কলা সংগ্রহ করে ঘরে তুলছেন। কেউ সংগ্রহ করা কলা থেকে ভুট্টা বের করছেন। আবার কেউ ভুট্টার কলা থেকে মেশিনের মাধ্যমে ভুট্টা আলাদা করে রোদে শুকাচ্ছেন। গত বছর প্রতি মণ ভুট্টা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়।
জামলাবাজ গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি নদীর তীরে ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে, অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা বেশ লাভজনক। এই ফসল চাষে আমরা লাভবান হয়েছি।’
রামপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম জানান, এই বছর ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। তবে বৃষ্টি না থাকায় সেচ দিয়ে পানি দিতে একটু খরচ বেশি হয়েছে। একই গ্রামের ফজলুল হকের ভাষ্য– ভুট্টা চাষ করে গত তিন বছর অনেক লাভবান হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন ভুট্টা কিনতে। এ বছর প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ১০০ মণ ভুট্টা পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
গজারিয়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক আব্দুল খলিল তালুকদার বলেন, ‘এক সময় এসব নদীর চর ছিল মরুভূমির মতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চরের মাটিতে ফসলের উপযোগী করতে এই এলাকার চাষিরা নিরলস চেষ্টা করছেন। এখন এই অঞ্চলের কৃষকের মন খুশিতে ভরেছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় ভুট্টার সোনালি রঙে মন জুড়িয়ে যায়।’
জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলা উদ্দিন জানান, নদীর পাড় ও চরের জমিতে ভুট্টা চাষ দিন দিন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০৬ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ বেশি হয়েছে। সিলেট বিভাগের মধ্যে পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ বেশি করছেন রামপুর গ্রামের চাষিরা। বিনা ঝামেলায় ভুট্টা উত্তোলন, ফলন ভালো ও লাভজনক হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ করবেন কৃষকরা।
জামালগঞ্জের নদীতীরবর্তী কৃষকদের। এই উপজেলার সুরমা, বৌলাই, ধনু নদীর চরকে কাজে লাগিয়ে চাষাবাদে নেমেছেন শতাধিক কৃষক। এসব চরে ভুট্টা, মরিচ, টমেটো, পেঁয়াজ, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়।