রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে নিহত দুই রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের উখিয়ায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) বি-৬২ ব্লক ও বি-৪৯ ব্লকের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আশ্রয়শিবিরের এক নারী ও এক পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, নিহত দুই ব্যক্তি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। এর মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। নিহত একজনের নাম সলিম উল্লাহ (৩৩)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের বি-২৮ ব্লকের মোহাম্মদ নুর ওরফে ইউনুছের ছেলে। তবে নিহত আরেক ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনায় সেতারা বেগম নামে একজন রোহিঙ্গা নারী গুলিবিদ্ধি হয়েছেন। তাঁকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। তিনি ক্যাম্প-৮–এর এ ব্লকের ৪৯ নং শেডের বাসিন্দা। গোলাগুলিতে আরও একজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে তাঁকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী এসব তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনার বিষয়ে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে ৪০ থেকে ৫০ জনের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের একটি দল আশ্রয়শিবিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) মোহাম্মদ রফিককে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া শুরু করে। পরে আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়।

উখিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, ঘটনাস্থলে এপিবিএন সদস্যরা অভিযান শুরু করলে সন্ত্রাসীরা ‘পুলিশ, পুলিশ’ বলে চিৎকার করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা এপিবিএন সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরেক ব্যক্তিও রোহিঙ্গা নাগরিক, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক, একটি ম্যাগাজিন ও ৭০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। এদিকে নিহত দুই রোহিঙ্গার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে একই আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১২) এইচ ব্লকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রোহিঙ্গা মাঝি শাহাব উদ্দিন নিহত হন। শাহাব উদ্দিন আশ্রয়শিবিরের এইচ ব্লকের ১৪ নং শেডের বাসিন্দা মনির আহমদের ছেলে।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.