হাসপাতালে নার্স দিয়ে সিজারিয়ান, প্রসূতির মৃত্যু

হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়াই নার্স দিয়ে সিজার করানোর পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

প্রসূতির মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের মালিক, কর্মকর্তা,কর্মচারী ডাক্তার ও নার্সরা পালিয়ে গেছেন।

ঘটনার পর স্বজনেরা গিয়ে ওই হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় আশপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

অপারেশনে মৃত নারীর নাম ইয়াসমিন আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী।

ইয়াসমিনের মা রাজিয়া আক্তার বলেন, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে।

এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেওয়া হয়। শুধু রাজিয়া আক্তার হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাকে জানানো হয়, মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে।

মা দ্রুত মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিলে তাঁরা হাসপাতালে ছুটে আসেন।

ইয়াসমিনের স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সকে চিকিৎসা দেওয়ার অনুরোধ করলেও তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই অবস্থার মধ্যেই রাত সাড়ে নয়টার দিকে ইয়াসমিনের অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।

স্বজনদের দাবি, সিজারিয়ান অপারেশনের সময় হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না। চিকিৎসক ছাড়া নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এ বিষয়ে শ্রীপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগেও এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও অঙ্গহানির ঘটনা ঘটার অভিযোগ রয়েছে।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.