কারাবন্দি জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমানের মৃত্যু

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় অভিযানের সময় পুলিশের ওপর জেএমবি নেতাদের হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার মামলায় কারাগারে থাকা মন্তেজার রহমান (৮১) নামে এক জেএমবি নেতার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মারা যাওয়া জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমান ক্ষেতলাল উপজেলার উত্তর মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। ২০০৭ সাল থেকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে আটক ছিলেন জেএমবির এই নেতা।

জয়পুরহাটের জেল সুপার রীতেশ চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মন্তেজার রহমান ২০০৭ সাল থেকে কারাগারে আটক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে হার্ট, কিডনি, প্রেসারসহ জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত সোমবার তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত ২৫০ শয্যার জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কারা তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। সেখানে মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে ক্ষেতলালের উত্তর মহেশপুর গ্রামে জেএমবি নেতা মন্তেজার রহমানের বাড়িতে ওই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা গোপন বৈঠক করছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার কবলে পড়ে পুলিশ। তখন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করেছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে অস্ত্র লুট, পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে জখম ও মারপিটের অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩ আসামি ২০০৪ সালের বিভিন্ন সময়ে আদালত থেকে জামিন পান। এরপর থেকেই তাঁরা পলাতক। তবে ২০০৭ সাল থেকে মন্তেজার রহমান কারাগারে ছিলেন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দিনাজপুর অঞ্চলের পরিদর্শক জালাল উদ্দীন মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ৬০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু হামলার সময় আসামি মন্তেজারের বাড়ির পাশে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার হলেও বিস্ফোরক আইনে কোনো মামলা করেনি পুলিশ। এ জন্য ২০০৯ সালের ১২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সিআইডিকে আবার তদন্তের আদেশ দেন।

সিআইডির দিনাজপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার শেখ আহসান-উল কবীর অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করে ২০১০ সালের ২৫ মে ৬০ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আদালতে পৃথক আরেকটি অভিযোগপত্র দেন। দুটি মামলার অভিযোগ গঠন ও বিচারকাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.