ছিনতাই ঠেকাতে গিয়ে চোখ হারালেন এসআই
রাজধানীর পরীবাগে তৃতীয় লিঙ্গের হামলায় মো. মোজাহিদ নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) চোখ নষ্ট হওয়ার ঘটনায় রমনা মডেল থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের চারজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতাররা হলেন তানিয়া, তন্নী ওরফে তিথী, কেয়া ও সাথী ওরফে পাভেল।
সোমবার (৩ জুন) নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।
তিনি বলেন, ৩০ মে রমনা থানার এসআই মোজাহিদসহ পুলিশের একটি দল পরীবাগ এলাকায় রাত্রিকালীন টহল ডিউটি করছিলেন। রাত অনুমান ৩টার দিকে সংবাদ আসে তৃতীয় লিঙ্গের একটি দল একজন রিকশাওয়ালাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করে তার কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ খবরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের কবল থেকে ওই রিকশাওয়ালাকে উদ্ধার করে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এক পর্যায়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে একটি ইট গিয়ে এসআই মোজাহিদের চোখে লাগে। এতে তার চশমার কাচ ভেদ করে চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পুরো চোখ থেতলে যায়। এতে তার ডান চোখটি নষ্ট হয়ে যায়।
‘বর্তমানে গুরুতর আহত এসআই মোজাহিদ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে তার চিকিৎসায় বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’
আশরাফ হোসেন বলেন, এসআই মোজাহিদের মতো একজন তরুণ অফিসার নিজের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে আহত হওয়ার বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। তারা আশ্বস্ত করেছেন যে, আহত এসআই মোজাহিদের চোখের চিকিৎসার জন্য যা যা করণীয়, দেশে বা দেশের বাইরে, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
রমনা বিভাগের ডিসি আরও বলেন, এ ঘটনায় ৩১ মে রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার পর মগবাজার রেলগেট এলাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত তানিয়া, তন্নী ওরফে তিথী ও কেয়াকে গ্রেফতার করে রমনা থানা পুলিশ।
পরে রিমান্ড চেয়ে গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মগবাজার এলাকা থেকে হামলায় জড়িত অন্য অভিযুক্ত সাথী ওরফে পাভেলকে গ্রেফতার করা হয়।