রকস্টার চেস্টার চার্লস বেনিংটনের জন্মদিন আজ

ছবি: সংগ্রহীত

এক জীবনে সবকিছুই ছিল তার মাদকাসক্তি, যৌন নিপীড়ন, একাকীত্ব, হতাশা কোনো কিছুই বাদ ছিলো না । কিন্তু, সবকিছু কাটিয়েও তিনি পেয়েছেন বিপুল জনপ্রিয়তা। ‘ভয়েস অব দ্য ইয়ুথ’ বলে খ্যাতি ছিলো তার। বলছি বিশ্বখ্যাত নো-মেটাল ব্যান্ড ‘লিংকিন পার্ক’ এর গায়ক চেস্টার চার্লস বেনিংটনের কথা। মাত্র ৪১ বছর বয়সে পাড়ি জমান পরপারে। কিন্তু পৃথিবী ছেড়ে যাবার আগে অসাধারণ সব গান দিয়ে গোটা এক প্রজন্মকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন বা এখনও রেখেছেন যিনি। বেঁচে থাকলে আজ ৪৭তম জন্মদিন পালন করতেন এ রকস্টার।

২০০০ সালে যখন রক ধারার গানগুলো জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিলো, তখন রক এর সাথে র‍্যাপ যুক্ত হয়ে জন্ম হয় নতুন এক জনরার। এরপর সে গানগুলো একে একে শ্রোতাদের কাছে হয়ে ওঠে তুমুল জনপ্রিয়। আর এ জনরার আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃত ‘লিংকিন পার্ক’। ব্যান্ডটির জনপ্রিয়তার পেছনে যে মানুষটির সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল, তিনি ব্যান্ডের ফ্রন্টম্যান চেস্টার বেনিংটন।

১৯৭৬ সালের ২০ মার্চ অ্যারিজোনার ফিনিক্সে জন্ম চেস্টারের। ছোটবেলা থেকেই জীবন সংগ্রামের লড়াইয়ে যোগ দিতে হয়েছে তাকে। বাবা-মার সংসারে ভাঙ্গনের পর ভয়ঙ্কর মাদকাসক্তি, ৭ বছর বয়সেই যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার মতো নানা অশান্তি ছিলো চেস্টারের জীবনে। তবু সঙ্গীত কখনও ছাড়েননি। পেট চালাতে বার্গার কিং এ চাকরি নেন এক পর্যায়ে। আর রাতে বিভিন্ন ক্লাবে গান গাওয়া ছিল নিত্যদিনের কাজ। আর এভাবেই একদিন লিংকিন পার্ক ব্যান্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাইক শিনোডার নজর কাড়েন তিনি। 

চেস্টারকে যোগ করার সময় ব্যান্ডের নাম ছিলো জিরো, এরপর প্রথম অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাকে ব্যান্ডের নাম হয়ে যায় হাইব্রিড থিওরি। কিন্তু রেকর্ড লেভেল কোম্পানি ওয়ার্নার ব্রাদাসের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর ব্যান্ডের নাম দেয়া হয় ‘লিংকিন পার্ক’। এরপর বাকিটা তো ইতিহাস।

নিজের অনন্য গায়কীর কারণে শ্রোতাদের কাছে অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন চেস্টার। লিংকিন পার্কের সহ প্রতিষ্ঠাতা শিনোডার র‍্যাপের সঙ্গে তার গায়কীতে জন্ম দিয়েছে ‘ইন দি এন্ড’, ‘নাম্ব’, ‘ওয়ান স্টেপ ক্লোজার’-এর মতো জনপ্রিয় সব গানের। ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ের রক শ্রোতাদের জন্য যা ছিল এক নতুন অভিজ্ঞতা।

ব্যান্ডের পাশাপাশি চেস্টারের সোলো প্রজেক্ট ‘ডেড বাই সানরাইজ’ রিলিজ পায় ২০০৫ সালে। ‘আউট অফ অ্যাশেজ’ নামের একটি ডেব্যু অ্যালবাম রিলিজ করেন ২০০৯ সালে। সে অ্যালবামটিও লুফে নেয় শ্রোতারা। বর্ণময় সঙ্গীতজীবনে গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড, বিলবোর্ড টপচার্টে টানা জায়গা করে নেয়াসহ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।

লিংকিন পার্কের সর্বশেষ অ্যালবাম ‘ওয়ান মোর লাইট’ প্রকাশিত হয় ২০২১ সালে। যেটি ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয় হয়ে উঠে। তবে এ সবই এখন ইতিহাস। ২০১৭ সালের ২০ জুলাই আত্মহননের পথ বেছে নেন চেস্টার। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় রক জনরার এক স্বর্ণালী অধ্যায়ের। তবে চলে গেলেও যুগের পর যুগ তিনি বেঁচে থাকবেন তার গানে, সুরে আর লেখায়। হ্যাপি বার্থডে রকস্টার।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.