উত্তরাখণ্ডে প্রবল বন্যায় ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, রেড অ্যালার্ট জারি

ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলজুড়ে চারদিন ধরে টানা প্রবল বৃষ্টিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ভূমিধসের ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে ও প্রতিবেশী উত্তরাখণ্ডের তিনটি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।

উত্তরাখণ্ডের কর্তৃপক্ষ লোকজনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যটিতে ভ্রমণে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ভিডিওতে ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে টানা প্রবল বৃষ্টির কারণে হওয়া ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র উঠে এসেছে। ভিডিওতে নদীর পানির প্রবল স্রোতে সেতু ভেঙ্গে ভেসে যেতে, ভূমিধসের সময় পাহাড় থেকে বোল্ডার গড়িয়ে পড়তে ও পানির প্রবল তোড়ে বহু গাড়িকে কাগজের নৌকার মতো ভেসে যেতে দেখা গেছে।

প্রবল বৃষ্টি হিমাচল প্রদেশের রাস্তাগুলোকে নদীতে এবং নদীগুলোকে তাদের পথে পড়া সবকিছুকে ধুয়েমুছে নেওয়া উন্মত্ত সাগরে পরিণত করেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।

টানা প্রবল বৃষ্টির কারণে হিমাচল প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হিসাবকৃত ক্ষয়ক্ষতি তিন হাজার কোটি রুপি থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির মধ্যে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে। মৃতের সংখ্যা ৮০ জনে পৌঁছে গেছে।

এখানে ৮ জুলাই থেকে মোট ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাজ্যটির দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগ জানিয়েছে। ভূমিধসের কারণে রাজ্যটির ১৩০০রও বেশি রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে বলে জানিয়েছে তারা। এসব সড়কের মধ্যে চন্ডিগড়-মানালি ও শিমলা-কালকা মহাসড়কও আছে।

রাজ্যটিতে ৪০টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের সব স্কুল ১৫ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলোর ২০ হাজার মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

হিমাচলের প্রতিবেশী উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টিজনিত করণে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পাঞ্জাবে মৃত্যু হয়েছে আটজনের আর হরিয়ানায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানে গত চারদিন ধরে ‘প্রবল থেকে প্রবলতর’ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে নদী, পাহাড়ি খাঁড়িগুলো উপচে পড়েছে এবং ড্রেনগুলো পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এতে রাজ্যগুলোতে অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং জরুরি পরিষেবাগুলো বিঘ্নিত হচ্ছে।

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। নদীটির পানি আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রত্যাশিত সময়ের ১৮ ঘণ্টা আগেই নদীটির পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.