রিজার্ভ নেমে গেছে ৩২ বিলিয়ন ডলারে

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) কমে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর গতকাল রোববার দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ডলার। গত বুধবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত বছর সংকট শুরু হলে তা কমতে শুরু করে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ডলার হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে রিজার্ভের ৮০০ কোটি ডলার ব্যবহারযোগ্য নয়। ফলে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২ হাজার ৪৫৭ কোটি ডলার।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে আকুতে ১৩৫ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছিল। আমদানি দায় মেটাতে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর তাতে কমছে রিজার্ভ।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে আন্ত-আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে এশিয়ার নয়টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, তা দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। তবে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্যদেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। 

ডলারের ওপর চাপ কমাতে ঋণপত্র খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শতাধিক পণ্যে বাড়তি শুল্ক বসিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এতে কমেছে ঋণপত্র খোলা। তবে আমদানি দায় পরিশোধ কমেনি। কারণ, আগের ঋণপত্র এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে। আবার বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ আছে। এদিকে ২০২২ সালে রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে কারণে কমছে রিজার্ভ।

রিজার্ভ থেকে আট বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভের অর্থে দেশে তহবিল গঠন করেছে। রিজার্ভ থেকে ৭০০ কোটি ডলার (৭ বিলিয়ন) দিয়ে গঠন করা হয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল। আবার রিজার্ভের অর্থ দিয়ে গঠন করা হয়েছে লং টার্ম ফান্ড (এলটিএফ), গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ)। বাংলাদেশ বিমানকে উড়োজাহাজ কিনতে ও সোনালী ব্যাংককে অর্থ দেওয়া হয়েছে। আবার পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কর্মসূচিতেও রিজার্ভ থেকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। এসব মিলিয়ে ব্যবহার হয়েছে আট বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ডলার, যার বিপরীতে সমপরিমাণ শ্রীলঙ্কান রুপি জমা আছে।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.