সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন । ফাইল ছবি
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম আজম মৃধা (৩৬)।
আজ শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান আজম মৃধা। তাঁর ছোট বোন সানজিদা আক্তার খবরটি নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা ২৪–এ পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন আজম মৃধা। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার গোসিংগা গ্রামের চা–দোকাদার শাজাহান মৃধার ছেলে তিনি। তিনি রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগ এলাকার বাসিন্দা। সিদ্দিকবাজারের বাংলাদেশ স্যানিটারি নামক প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত ছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক এস এম আইয়ুব হোসেন আজ বেলা অবেলাকে বলেন, আজম মৃধার শরীরের ৮০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল।
দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আজম ছিলেন সবার বড়। তাঁর প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ৬ বছর বয়সী এক মেয়ে আছে। স্ত্রীর নাম রিয়া আক্তার এবং মেয়েটির নাম লাভা।
বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আজম মৃধার লাশ নিয়ে গেছে তাঁর পরিবার। তাঁর বাবা শাজাহান মৃধা আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমার পোলা শেষ।’
বিস্ফোরণে আহত ১২ জন এই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন মারা গেলেন। আজম মৃধার আগে গত বুধবার রাতে মো. মুসা (৪৫) নামের একজন মারা যান। লাইফ সাপোর্টে থাকা ইয়াসিন আলী (২৬) নামের আরও একজনের মৃত্যু হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে।
এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে আইসিইউতে আছেন দুজন, তাঁদের মধ্যে একজন লাইফ সাপোর্টে। মো. মোস্তফা (৫০) ও কামাল শেখ (৪০) নামের দুজন চিকিৎসা নিয়ে এখান থেকে চলে যান। বাকি পাঁচজনের মধ্যে কারও কারও শ্বাসনালিও পুড়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত রয়েছে। কাচসহ ছিটকে আসা বিভিন্ন পদার্থে শরীরও কেটেছে।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ জন।
গত মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানের বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনটির বেসমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দুই পাশে লাগোয়া দুটি ভবনের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পরিত্যক্ত লাইনের ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাস জমে ভবনের বেজমেন্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।