রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম

ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত কার্যক্রমে খাদ্য সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় জনগোষ্ঠী থেকে রিটেইলার (খুচরা বিক্রেতা) নিয়োগে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বেশির ভাগ রিটেইলারই জেলার বাইরের। 

অভিযোগ উঠেছে, রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে খোলাবাজার থেকে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী কিনে রোহিঙ্গাদেরই সরবরাহ (রিসাইকেল) করা হচ্ছে। রিটেইলারদের এ ধরনের অনিয়মে সংস্থাটির রিটেইল সাপ্লাই চেইন ইউনিটের অ্যাসোসিয়েট আসাদুজ্জামান পলাশ ও কামরুল হাসান নাদিম সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

উখিয়ার বালুখালী ৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের একটি আউটলেটের কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, কক্সবাজার শহরের তারকামানের হোটেলে বসে পলাশ ও নাদিম রিটেইলারের সঙ্গে বৈঠক ও টাকা লেনদেন করেন। 

বালুখালী ৭ নম্বর ক্যাম্প ইনচার্জ রবীন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আউটলেট থেকে বিতরণ করা পণ্য রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে কিনে আবার তাদেরই বিতরণের অভিযোগ রয়েছে।  

তবে আইল্যান্ড ট্রেডিংয়ের মালিক শাহাদাত হোসেন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো প্রুফ নেই। থাকলে লিখে দেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে রাখাইন রাজ্যের প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। এককভাবে ডব্লিউএফপি রোহিঙ্গাদের চাল, ডাল, শুঁটকি, তেল, কাঁচা মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। অনিয়মের বিষয়ে মো. আসাদুজ্জামান পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে ডব্লিউএফপির কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি। একই পরামর্শ দেন কামরুল হাসান নাদিমও।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগে ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও জবাব আসেনি। তবে ফিরতি মেইলে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের মেইলটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। ওখান থেকে আপডেট পেলেই তা জানানো হবে।’ 

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ধরনের বেশ কিছু পণ্য জব্দ করেছে। এই অনিয়মের সঙ্গে ডব্লিউএফপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে। 

মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘ডব্লিউএফপির তথ্য অনুযায়ী, রিটেইলারদের মধ্যে একজন কুতুপালংয়ের (উখিয়া), দুই কী তিনজন কক্সবাজারের এবং বাকিগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রামের। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.