কুমিল্লার শাহজালাল বলী জব্বারের বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন

জব্বারের বলীখেলার এবারের আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলী চ্যাম্পিয়ন। ছবি : সংগৃহীত

জব্বারের বলীখেলার ১১৪ তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী । আজ মঙ্গলবার বিকেলে লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তিনি পরাজিত করেন চকরিয়ার তারিকুল ইসলাম বলীকে। খেলা শুরুর এক মিনিট পরই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান তারিকুল। তিনি পায়ের ব্যথার কথা বলে সরে যান প্রতিযোগিতা থেকে। এভাবে জব্বারের বলীখেলার শিরোপা পুনরুদ্ধার করেন শাহজালাল।

এর আগে ২০১৯ সালে জব্বারের বলীখেলায় তারিকুলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল। তার আগের বছর শাহজালালকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জিতেছিলেন তারিকুল। গত বছরও শাহজালাল পরাজিত হন তারিকুলের কাছে। কয়েক বছর ধরে এভাবে দুজনের মধ্যে শিরোপার লড়াই চলতে থাকে।

১১৪ বছরে পা রেখেছে এবারের আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা বা বলীখেলা। মাঝখানে দুই বছর করোনার জন্য এবং তারও আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একবার বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। লালদীঘি মাঠ সংস্কারের জন্য গতবার সড়কের ওপর রিং বসিয়ে বলীখেলা হয়েছিল। তবে এবার লালদীঘি মাঠেই হয়েছে বলীখেলা। এতে অংশ নেন ৬৪ জন বলী।

আজকের খেলায় ৭১ বছরের খাজা আহমদের মতো বলী যেমন ছিলেন, তেমনি ১৭ বছরের কিশোর নূর হোসেনও অংশ নেয়। তাঁদের মধ্যে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপের পাশাপাশি তৃতীয় স্থান অর্জনকারী খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমাও ছিলেন।

আজকের খেলায় ৭১ বছরের খাজা আহমদের মতো বলী যেমন ছিলেন, তেমনি ১৭ বছরের কিশোর নূর হোসেনও অংশ নেয়। তাঁদের মধ্যে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপের পাশাপাশি তৃতীয় স্থান অর্জনকারী খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমাও ছিলেন। সৃজনের সঙ্গে প্রথম সেমিতে উত্তীর্ণ হন তারিকুল। এই দ্বৈরথ ছিল দেখার মতো। দুজন ১১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড লড়াই করেন। শেষ পর্যন্ত সৃজনকে হারিয়ে তারিকুল ফাইনালে পা রাখেন। অপর সেমিতে শাহজালাল এক মিনিটের মধ্যেই আনোয়ারার আবদুর নূরকে হারিয়ে দেন। পরে দুজন মুখোমুখি হন ফাইনালে। তাতে শেষ হাসি শাহজালালের। চ্যাম্পিয়ন হয়ে শাহজালাল বলেন, ‘আমি আনন্দিত। চ্যাম্পিয়নশিপ পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি।’

শাহজালাল আনসার ভিডিপির হয়ে পেশাদার কুস্তিগির হিসেবে বিভিন্ন কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। লালদীঘি মাঠের আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা বা বলীখেলায়ও তিনি বেশ কয়েকবার অংশ নেন।

এই বলীখেলা দেখার জন্য লালদীঘি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের গাছ ও ভবনের ছাদে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপকে ট্রফি তুলে দেন প্রধান অতিথি সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তাঁদের যথাক্রমে নগদ ২৫ ও ২০ হাজার টাকা অর্থপুরস্কারও দেওয়া হয়। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী সৃজন চাকমাকে দেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা।

এর আগে বিকেলে লালদীঘি মাঠে তৈরি করা রিংয়ে উঠে বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। এ সময় প্রধান অতিথি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল, সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবছর বাংলা ১২ বৈশাখে এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়। বলীখেলাকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা বসে লালদীঘির আশপাশের এলাকায়। বলীখেলাকে কেন্দ্র করে আজ মেলায় ছিল ঠেলাঠেলি ভিড়। গৃহস্থালির বিভিন্ন সামগ্রী, শিশু–কিশোরদের খেলনা, গৃহসজ্জার জিনিস, তৈজস, ঝাড়ু, খুন্তি, কুড়াল, আসবাব, গাছপালা—কী নেই এই মেলায়! আগামীকাল বুধবার শেষ দিনে মেলায় অনুষ্ঠিত হবে চাটগাঁইয়া ঈদ উৎসব।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.