ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ প্রধানকে তলব

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণাথীর সংস্থা ইউএনএইসিআরের রিপ্রেজেন্টেটিভ জোহানেস ভন পার ক্লকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রত্যাবাসনে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের খাবার না দেওয়ায় তাঁকে তলব করা হয়েছিল। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যাতে ইউএনএইসিআর যাতে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, সেই বার্তাই তাঁকে দেওয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ফোন করে তলব করা হয় জোহানেস ভন পার ক্লকে। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। এ সময় ইউএনএইসিআরের বাংলাদেশ কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ চীনের মধ্যস্থতায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়। এতে স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হয়েছিল রোহিঙ্গার চার পরিবার। এ চার পরিবার ভাসানচরে ছিল। সেখান থেকে চার পরিবারের ২৪ সদস্যকে কক্সবাজার কুতুপালং ট্রানজিট সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। এ ট্রানজিট সেন্টারে তারা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছিল। তবে হঠাৎ করে গতকাল সোমবার তাদের খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয় জাতিসংঘ।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান। সোমবার রাতে তিনি বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা এসব রোহিঙ্গাদের দুপুরে ও রাতে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।

যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘এটি সত্য নয়। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) খাদ্য সরবরাহ করে থাকে এবং কাউকে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যারা প্রত্যাবাসনে রাজি হয়েছেন, তাদের খাবার না দেওয়টাকে বাংলাদেশ ভালোভাবে নেয়নি। বাংলাদেশ এটিকে বৈষম্য হিসেবে দেখেছে। সেই সঙ্গে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া হিসেবও দেখেছে। জাতিসংঘ যেখানে পুরো বিশ্বে বৈষম্য কমিয়ে আনার কাজ করে থাকে। সেখানে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর একটি অংশের সঙ্গে বৈষম্য করছে, এটি কল্পনারা বাইরের একটি বিষয়। তবে ঘটনাটি ঘটেছে। তাই জোহানেস ভন পার ক্লকে তলব করে সতর্ক করা হয়েছে।’

সূত্র জানায়, জোহানেস ভন পার ক্লকে তলব করে মৌখিকভাবে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ইউএনএইচসিআর যাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাধা না হয়ে দাড়ায় সেই বার্তাও তাকে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ তার কাছে জানতে চেয়েছে ইউএনএইচসিআরের ম্যান্ডেটের মধ্যে কি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করার সুযোগ রয়েছে কি না। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে জোহানেস ভন পার ক্লকে। জোহানেস ভন পার ক্ল ঢাকাকে জানিয়েছেন ট্রানজিট সেন্টারে থাকা রোহিঙ্গাদের আবারও খাবার দেওয়া শুরু করা হবে।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.