গত ঈদের চেয়ে এবারের ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং: আইজিপি

ছবি: সংগৃহীত

গত ঈদের (ঈদুল ফিতর) তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইজিপি।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে। এর সঙ্গে ফলবাহী যানবাহন আসবে, এগুলোকে আটকানো যাবে না। সবকিছু বিবেচনায় রেখে, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ঈদযাত্রা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে সভা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সড়কমন্ত্রীর দপ্তর, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং প্রতিটি জেলায় সকল স্টেকহোল্ডার, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমরা সবাই একসঙ্গে, একযোগে কাজ করছি। আশা করছি এবারও সকলের সহযোগিতায় যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’

আইজিপি বলেন, ‘গতবারের ঈদের যাতায়াতব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুন্দর ছিল। ওই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। প্রকৌশলী ও রাস্তাঘাটের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসকেরা বৈঠক করেছেন। পুলিশের মহানগর, জেলা পুলিশ, পুলিশের সকল বিভাগ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষ যেন গন্তব্যে যেতে পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষ গতবারের চেয়েও স্বস্তিতে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।’

পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট খানাখন্দ ছিল, দুরবস্থা ছিল। আগের চেয়ে রাস্তার অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। সরকার অনেক উন্নয়নকাজ করেছে। এখনো কার্যক্রম চলমান আছে। যার কারণে জনসাধারণ দ্রুততম সময়ে স্বাভাবিক সময়ের মতোই ঈদের সময় রাখার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় পর্যায়ের কর্মকর্তারা সব সময় নিয়োজিত থাকবেন।’

গরুর হাটের নিরাপত্তার বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘গরুর হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে। গরুর হাটে টানাহেঁচড়া, চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। এবার যদি কেউ কোনো ট্রাক বা নৌকা তাদের গন্তব্যের আগে থামায়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, এই কাজগুলো করবেন না। যদি করেন, তাহলে আইনের যে প্রয়োগ করা দরকার, সেটাই করব। ব্যবসায়ী ও ইজারাদার, গরুর মালিক—আপনাদের কোনো সমস্যা হলে নিকটস্থ পুলিশের সহায়তা নেবেন। যদি কাছাকাছি কাউকে না পান, তাহলে ৯৯৯ ফোন দিন। আপনারা আমাদের সহায়তা দিন, আমরা আপনাদের নিশ্চয়তা দেব।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাল টাকার বিস্তার রোধ এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন আমাদের কাছে থাকবে। কারও সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। জাল টাকার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টাকা পরিবহনে সমস্যা হলে সেখানেও পুলিশ সহায়তা করবে।’

এ সময় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন, গাজীপুর পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম, অতিরিক্ত আইজিপি (হাইওয়ে) মো. শাহাবুদ্দিন খান, ডিআইজি (অপারেশন) হায়দার আলী খান, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব রহমান, পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স এআইজি (মিডিয়া) মো. মঞ্জুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.