রংপুরে মহাসমাবেশের মঞ্চে শেখ হাসিনা

রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার চারটার দিকে মঞ্চে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। এ সময় তার সামনে থাকা নেতা-কর্মীরা স্লোগান ধরলে, মুখরিত হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উত্তরাঞ্চলের নানাবিধ উন্নয়নগুলো তুলে ধরেন।

এ দিকে সকাল থেকেই মিছিল আর স্লোগানে রংপুর যেন এক উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। ভোর থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বাস-ট্রাক-পিকআপযোগে বিভিন্ন বয়সী মানুষ সমাবেশস্থলে হাজির হন। 

রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ে দুপুর ১২টায় দিনাজপুরের বিরামপুর থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলের দিকে যাচ্ছিল একটি দল। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া বিরামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পলাশ কুমার মণ্ডল বলেন, বিরামপুর উপজেলা থেকে প্রায় ২০০ বাস, ট্রাক, পিকআপে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন। দুই কিলোমিটার দূরে রংপুর বাস টার্মিনালে তাঁদের গাড়িগুলো রেখে এসেছেন। 

পলাশ কুমার বলেন, ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে দেখতে রংপুরে সমাবেশ সফল করতে আমরা এসেছি। মিছিল আর স্লোগানে আনন্দে আনন্দে জিলা স্কুল মাঠে যাচ্ছি। সরাসরি রংপুরের জন্য সুখবর প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে শুনব।’

বিরামপুর সদরের দিনমজুর হাসন আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোর খুব শখ সামনাসামনি নিজ চোখে শেখের ব্যাটিক দেখিম। ওই তকনে নেতা-কর্মীর গাড়িত উঠি আসছু। শেখ হাসিনাক দেখির তকনে জিলা স্কুল মাঠোত যাওছু।’ 

হাতে প্ল্যাকার্ড, পরনে টি-শার্ট, মাথায় ক্যাপ পরে দল বেঁধে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশে যোগ দিতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছুটছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরুজা বারী। তিনি বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে নারীরাও পিছিয়ে নেই। হাজারো মানুষ সুন্দরগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে এসেছেন। সমাবেশে আমরা রংপুরবাসী উন্নয়নের সুখবর পাব ইনশা আল্লাহ।’ 
 
মিঠাপুকুরের রানীগঞ্জ থেকে সমাবেশে আসা বেলি বেগম বলেন, কারমাইকেল কলেজ থেকে হেঁটে এসেছেন তিনি। তাতে ক্লান্ত বোধ হলেও প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখার পর সেই ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। 

গঙ্গাচড়ার কোলকন্দ থেকে ৬৫ বছর বয়সী দুলাল হোসেন সমাবেশে এসেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। দুলাল হোসেন বলেন, ‘বন্যার সময় তিন-চাইরবার ঘর নড়ার নাগে তিস্তার ভাঙনের তকনে। ফজরে আসছু শেখের বেটি মুখে তিস্তা নদী বাঁধের খবর শুনার তকনে।’ 

সমাবেশকে ঘিরে রংপুর মহানগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। ১ হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশপথগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনসভায় আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে ব্যস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। তখন তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেন। সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পর তিনি আজ বুধবার আবার রংপুরে আসছেন। 

এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতির আলোকে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন রংপুরের বধূ শেখ হাসিনা। তিনি আজ ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.