হাতিয়ায় জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ছবি: সংগৃহীত
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ভারী বর্ষণ ও প্রচণ্ড জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। লঘুচাপের প্রভাবে মেঘনা নদী রয়েছে উত্তাল। মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতায় জোয়ার বইছে। এতে পানি ঢুকে পড়েছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে।
গত শুক্রবার থেকে আজ রোববার পর্যন্ত উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় আজ সকাল থেকে অস্বাভাবিক জোয়ারে হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়নের বেড়ির বাইরের অনেকগুলো বাড়ি-ঘর, দোকানে পানি ঢুকে গেছে। বৈরী আবহাওয়া ও মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় জোয়ারের কারণে অনেকের বাড়িতে রান্না করা যাচ্ছে না। নিচু সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এক অঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত জোয়ারে নলেরচর, কেয়ারিংচর, সুখচর, ঢালচর, নিঝুমদ্বীপসহ হাতিয়ার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ইউনুছ বলেন, ‘অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তুপানিয়া গ্রামের বেশির ভাগ অংশ। বেড়ি বাঁধের বাইরে হওয়ায় সহজে জোয়ারে পানিতে তলিয়ে যায় এই গ্রামটি। রোববার দুপুর ১টায় আসা জোয়ারের পানিতে নলচিরা ঘাট এলাকার অনেক দোকানে পানি ঢুকে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।’
একই অবস্থা নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে। নিঝুম দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় নিচু এলাকার গ্রামগুলো সহজে প্লাবিত হয়। সকালে আসা জোয়ারে মদিনা গ্রাম, বন্দরটিলা, চেউয়াখালী গ্রাম ও ডুবাইর খাল এলাকার ৫-৭ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল।
নিঝুম দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন জানান, নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়কটি ছাড়া গ্রামীণ অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড ছাড়াও অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে ঢালচর ও চরগাসিয়ার বেশির ভাগ এলাকা। চরগাসিয়া জনতা বাজারের ব্যবসায়ী মাকসুদ জানান, বাজারের মাঠ ৫-৭ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে দোকানে এখনো পানি ওঠেনি, তবে ছুঁই ছুঁই অবস্থা। রাতের জোয়ারে দোকানঘরে পানি ওঠার আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া চরের বিস্তীর্ণ এলাকা ৫-৭ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ জরুরি প্রয়োজনে হাটবাজারে আসতে পারছেন না। সবাইকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে হচ্ছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কায়সার খসরু বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার সংবাদ এসেছে। আমি ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষজনের যেন ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকার জন্য বলা হয়েছে।’