সরকার নির্ধারিত দামে মেলে না কিছুই

 আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের যে হারে দাম বেড়েছিল সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পর কিছুটা কমলেও এখনো বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। পাইকারি বাজারের বোর্ডে ঝুলিয়ে বেশি দামে এ সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন সেকশন, মোহাম্মদ ও ফার্মগেট এলাকার বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর খুঁচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ওঠেছিল ৫০ টাকাতে। সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পর ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। দেশি ছোট পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, দেশি বড় পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা। সরকার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা দাম বেঁধে দেওয়ার পর দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা থেকে ১০ কমে ৯০ টাকা; দেশি মাঝারি পেঁয়াজ ও আমদানি করা পেয়াজ ৯০ টাকা থেকে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে  ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দামে এখনো নৈরাজ্য চলছে। রাজধানীর বাজারে এখনো প্রতি পিস ডিম ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকার প্রতি পিস ১২ টাকা দাম বেঁধে দেওয়ার পর প্রতি হালি ৫২ টাকা থেকে কমে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে দুই ধরনের  নিয়ম চলছে। পাইকারি বাজারে ছোট  ১০০ ডিমের দাম ১১৬০ থেকে বাজার ভেদে ১১৮০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি পিসের দাম ১১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১১ টাকা ৮০ পয়সা। বড় ১০০ ডিমের দাম ১২০০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি পিস ডিমের পাইকারি দাম দাম ১২ টাকা।  

মিরপুরে-১১ এর পাইকারি বিক্রেতা আনিসুল ইসলাম বলেন, আমরা কম দামে কিনতে না পারলে কম দামে বিক্রি করবো কিভাবে? দাম বেশি তারপরও ভেঙে যাওয়াসহ বিভিন্ন খরচ আছে।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোক্তার কাছে ডিম পৌঁছতে তিন স্তরে হাত বদল হয়। প্রথমে মূল ফার্ম বা কোম্পানি থেকে হাত বদল হয়ে ডিমের আড়ৎ এবং থেকে তৃতীয় ধাপে পাইকারি পর্যায় আসে। যার কারণে সব ঘা গিয়ে পড়ছে ভোক্তার ওপর।

এদিকে পেঁয়াজের দাম কমলেও কেনো এখনো সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম ও বাজারের দামের মধ্যে পার্থক্য থেকে যাচ্ছে। মিরপুর-১১ এর পাইকারি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান তানভির এন্টারপ্রাইজের আলী হোসেন জানান, আমদানি ব্যয় এখনো বেশি হওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, আগের চেয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে খরচ বেড়েছে। এসব কারণে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না। তার আড়তে দেশি পেঁয়াজ নেই, আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারি প্রতি কেজি ৫৪ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

পাশে শরিয়তপুর এন্টারপ্রাইজে পাইকারি দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৭৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এবং আমদানি করা বড় পেঁয়াজের প্রতি কেজি পাইকারি দাম ৪৮ টাকা।

অপরদিকে মিরপুরের ১১ নম্বর ও ১৪ নম্বরের কচুক্ষেতে পাইকারি বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি সাদা আলু ৪০ টাকা, আর লাল আলু ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদনের এলাকার ভিন্নতার কারণেও আলু কম-বেশি হচ্ছে।  রাজশাহী অঞ্চলের আলু পাইকারি ৪০ টাকা আর মুন্সিগঞ্জের আলু বিক্রি করা হচ্ছে ৩৮ টাকা।

সরকার আলুর পাইকারি দাম বেঁধে দিয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। আর আপনারা পাইকারি বিক্রি করছেন ৪০ টাকা। তাহলে ভোক্তা কত টাকা দামে আলু কিনবে, এমন কথার জবাবে কচুক্ষেতের পাইকারি বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা লাভ করি। আমরা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কিনতেই পারি না। এরপর আলু নষ্ট হওয়ার লস আছে। তাহলে কিভাবে ৩৬ টাকা কেজি  বিক্রি করবো? পাইকারি বাজারে আসার আগে কোল্ড স্টোরে গিয়ে দেখেন।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.