ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহ পচে যাচ্ছে গাজার আল-শিফা হাসপাতালের উঠানেই

বিবিসি গাজার চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরে ও চারিপাশে স্তূপ হয়ে থাকা মৃতদেহ গুলো পচতে শুরু করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মারওয়ান আল-বারশ বলেছেন, ‘শতাধিক মৃতদেহ উঠানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। মর্গের পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে আছে জ্বালানির অভাবে।’

বিবিসি আরবির গাজা লাইফলাইন প্রগ্রামে আল-বারশ বলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী জেনারেটরগুলো লক্ষ্য করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছে। ফলে মৃতদেহগুলোতে পচন ধরেছে। আমরা মৃতদেহগুলো থেকে কীট বের হতে দেখছি।’
আল-বারশ জানান, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হুমকির কারণে তারা মৃতদের দাফন করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা দখলদার বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করেছি, যাতে আমাদের হাসপাতালের ভেতরে মৃতদেহ দাফন করার অনুমতি দেওয়া হয়।তবু কেউ হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তাকে সরাসরি গুলি করা হচ্ছে।’

ইসরায়েল দাবি করেছে, আল-শিফার নিচে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার রয়েছে। এ বিষয়ে আইডিএফ মুখপাত্র লিবি ওয়েইস বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি। আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, যা এটিই বলছে।’
আইডিএফ একটি ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনা প্রকাশ করে দাবি করেছে, হাসপাতালের নিচে একটি সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্ক রয়েছে। তবে হামাস অস্বীকার করেছে। ভেতরের ডাক্তাররাও জোর দিয়ে বলছেন, সেখানে হামাসের উপস্থিতি নেই।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলেছে, ‘আল-শিফা হাসপাতাল এখন আর হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে না।’ হাসপাতালের কর্মীদের মতে, ৩৯জন শিশুর মধ্যে তিনজন শিশু মারা গেছে।

জ্বালানির ঘাটতির কারণে তাদের নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ বলেছে, তাদের জ্বালানি ডিপো শুকিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, পাঁচ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে যুদ্ধ চলছে।

৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর পর থেকেই হামাসকে ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি নিয়ে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে, যার অধিকাংশ বেসামরিক মানুষ। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১১১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক মানুষ।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.