জাপানি তিন শিশুকে বাবা-মায়ের মধ্যে ভাগ করে দিল হাইকোর্ট
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশে জাপানি মা এরিকো নাকানোর কাছে থাকা বড় মেয়েটি তাঁর কাছেই থাকবে। আর বাংলাদেশে বাবার কাছে থাকা মেজ মেয়েটি তাদের বাবা ইমরান শরীফের কাছেই থাকবে। এই বাবা–মা তাঁদের তিন সন্তানের সঙ্গে দেখা করার ও সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।
বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা ইমরান শরীফ ও জাপানের নাগরিক মা এরিকো নাকানোর তিন মেয়ের মধ্যে ছোটটি বর্তমানে জাপানে নানির কাছে রয়েছে।
শিশুরা কার হেফাজতে থাকবে, এ নিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিশুদের বাবার করা পারিবারিক আপিল নামঞ্জুর করে গত বছরের ১২ জুলাই রায় দেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন (সিভিল রিভিশন) করেন বাবা ইমরান। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৩ জুলাই হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল আংশিক চূড়ান্ত ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এই আদেশে চরম ক্ষুব্ধ বড় মেয়ে জেসমিন মালাইকা ও জাপানি মা। বড় মেয়ে বলেন, ‘বড় বোন হিসেবে এটা স্বাভাবিক আমি আমার অন্য বোনদের সঙ্গে জাপানে থাকতে চাইবো। কারণ, জাপানই আমাদের জন্মভূমি। পুরো তিন বছর ধরে আমরা অসুস্থ দাদি বা আমার ছোট বোনকে দেখতে পারিনি। আমাদের কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নেয়া হচ্ছে। আমি সবার কাছে একটাই অনুরোধ করছি, আমাদের উন্নয়ন, আমাদের শিক্ষা এবং সবকিছু যেন এভাবে আর ধ্বংস না হয়।’
আর জাপানি মা নাকানো এরিকো বলেন, ‘দুই নাবালিকা মেয়েকে আটকে রাখাকে বেআইনি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আজকের রায়ে আমি খুব হতাশ। আমার শিশুদের কল্যাণের স্বার্থে এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবো।’
অন্যদিকে এক সন্তানকে জিম্মায় পেলেও বড় মেয়ে হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ বাবা ইমরান শরীফও। তিনি বলেন, ‘এটা আমার বাচ্চা। আমার বাচ্চাকে আমার বুক থেকে নিয়ে যাবে এটা আমি কোনদিন গ্রহণ করবো না। জাপান চলে গেলে আমি কোনদিন তাদের দেখতে পারবো না।’
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।