ইসরায়েল বাহিনীর গুলিতে বাবার সামনেই মারা যায় শিশুটি
নিজের চার বছরের হাস্যোজ্জ্বল শিশু সন্তান সালমার কথা স্মরণ করতে গিয়ে কণ্ঠ ধরে আসছিল বাবা হুসেইন জাবেরের। এতটুকু শিশুকেও ইসরাইলি সেনারা কীভাবে তার চোখের সামনে গুলি করে মারতে পারল, তা যেন কোনোভাবেই বোধগম্য হচ্ছে না তার।
হুসেইন জাবের একজন আলোকচিত্রী। কাজ করেন ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘ রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিতে (ইউএনআরডব্লিউএ)। পরিবারের সদস্যদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গত ৫ ডিসেম্বর তিনি গাজা শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। ঠিক ওই সময় ছোট্ট মেয়ে সালমাকে চিরতরে হারান জাবের। সংবাদমাধ্যমকে নৃশংস সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
মেয়েকে হারানোর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কণ্ঠ ধরে আসছিল বাবা হুসেইন জাবেরের। ইসরায়েলি বাহিনীর যে হামলায় সালমা মারা যায়, একই হামলার ঘটনায় জাবেরও আহত হন।
জাবের বলেন, ‘আমরা যে ভবনে থাকতাম, সেনারা সেটির বাসিন্দাদের সরে যেতে বলে। এরপরই আমরা ভবনটি থেকে বেরিয়ে আসি। অন্য বাসিন্দারা গাজা সিটির পশ্চিম এলাকা অভিমুখে হাঁটছিলেন। এ সময় সেই সড়কে আর কেউ ছিলেন না।
ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ওই এলাকার বাড়িঘর, লোকজনকে কেমন করে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয় তা নিয়ে পরে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন জাবের। বলেন, ‘সালমাই ছিল প্রথম। আমার কাছে আসতে সে তার বোন সারাহর পেছন পেছন দৌড়ে রাস্তার মোড়ে আসে। শুরু হয় হঠাৎ প্রচণ্ড গোলাগুলি।’
জাবের বলেন, চোখের সামনেই সালমার ঘাড়ে এসে গুলি লাগল। সে অবস্থায়ও সে দৌড়াচ্ছিল। পরে তাকে কোলে তুলে নিয়ে সেখান থেকেই গাড়ি তুলি। কোলে তুলে নেয়ার সময় সে যন্ত্রণায় ছটফট করছিল।
ওই গুলিতে সালমা যখন মারা যায়, তখন ৯ বছরের সারাহ অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। একটি গুলি সারাহর গায়ে থাকা জ্যাকেট এফোঁড়–ওফোঁড় করে বেরিয়ে যায়। ছোট্ট শরীরের কয়েক মিলিমিটার দূর দিয়ে বেরিয়ে যায় গুলিটি।