২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হচ্ছে মেট্রোরেল : ওবায়দুল কাদের

মেট্রোরেল

আগামী ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করবেন।

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীর উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের আজ জানান, ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পথে উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর–১১, মিরপুর–১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও—মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে সাতটি—বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল।

অবশ্য মেট্রোরেল কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সম্প্রসারণ করা হবে। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল আগামী বছরের শেষ দিকে চালুর কথা রয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে ২০২৫ সাল লেগে যেতে পারে।

ডিএমটিসিএলের তথ্যমতে, মেট্রোরেল ছুটবে সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে। শুরুর দিকে রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও যেতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। পরে যাত্রার সময় ১৬ থেকে ১৭ মিনিটে নেমে আসবে।

উদ্বোধনের পর দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে। প্রথম দিকে সকালে কিছুক্ষণ, আবার বিকেলে কিছুক্ষণ ট্রেন চলবে। অর্থাৎ ট্রেন চলাচলের সংখ্যা কম থাকবে। যাত্রীদের ওঠানামা ও আসনে বসা—এসব বিষয়ে অভ্যস্ত ও পরিচিত করাতে স্টেশনে ট্রেন কিছুটা বাড়তি সময় দাঁড়াবে। কিন্তু পরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে এবং স্টেশনে দাঁড়ানোর সময় কমে যাবে। ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, শুরুতে পাঁচটি ট্রেন চলাচল করবে।

ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে সব স্টেশনে থামবে না মেট্রোরেল। শুরুর স্টেশন উত্তরা উত্তর থেকে ছেড়ে ট্রেনটি পল্লবী গিয়ে থামবে। এরপর না থেমে আগারগাঁও চলে যাবে। মাঝের স্টেশনগুলোয় ট্রেন থামানোর কার্যক্রম শুরু হবে পরে।

সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করেছে ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল যে অংশে চলাচল শুরু করবে, সেই উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা।

উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার (মধ্য) ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই—২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা উত্তর) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে গণপরিবহনে চলাচলে স্বস্তির দরজা খুলবে। মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবে। এখন যেমন লক্কড়ঝক্কড় বাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়, অটোরিকশাচালকদের ভাড়ার নৈরাজ্য সহ্য করতে হয়, সেই ভোগান্তি থাকবে না।

পরিবহনবিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশলের অধ্যাপক সামছুল হক বলেছেন, মেট্রোরেলের পথে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের যাত্রা আরামদায়ক, দ্রুতগতির ও নিরবচ্ছিন্ন হবে। যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবেন। এখনকার গণপরিবহনে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হচ্ছে মেট্রোরেল : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করবেন।

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীর উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের আজ জানান, ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পথে উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর–১১, মিরপুর–১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও—মোট ৯টি স্টেশন রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে সাতটি—বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল।

অবশ্য মেট্রোরেল কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সম্প্রসারণ করা হবে। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল আগামী বছরের শেষ দিকে চালুর কথা রয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে ২০২৫ সাল লেগে যেতে পারে।

ডিএমটিসিএলের তথ্যমতে, মেট্রোরেল ছুটবে সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে। শুরুর দিকে রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও যেতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। পরে যাত্রার সময় ১৬ থেকে ১৭ মিনিটে নেমে আসবে।

উদ্বোধনের পর দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে। প্রথম দিকে সকালে কিছুক্ষণ, আবার বিকেলে কিছুক্ষণ ট্রেন চলবে। অর্থাৎ ট্রেন চলাচলের সংখ্যা কম থাকবে। যাত্রীদের ওঠানামা ও আসনে বসা—এসব বিষয়ে অভ্যস্ত ও পরিচিত করাতে স্টেশনে ট্রেন কিছুটা বাড়তি সময় দাঁড়াবে। কিন্তু পরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে এবং স্টেশনে দাঁড়ানোর সময় কমে যাবে। ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, শুরুতে পাঁচটি ট্রেন চলাচল করবে।

ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে সব স্টেশনে থামবে না মেট্রোরেল। শুরুর স্টেশন উত্তরা উত্তর থেকে ছেড়ে ট্রেনটি পল্লবী গিয়ে থামবে। এরপর না থেমে আগারগাঁও চলে যাবে। মাঝের স্টেশনগুলোয় ট্রেন থামানোর কার্যক্রম শুরু হবে পরে।

সরকার মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করেছে ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। প্রথম পর্যায়ে মেট্রোরেল যে অংশে চলাচল শুরু করবে, সেই উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা।

উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার (মধ্য) ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই—২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন (উত্তরা উত্তর) থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে গণপরিবহনে চলাচলে স্বস্তির দরজা খুলবে। মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবে। এখন যেমন লক্কড়ঝক্কড় বাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়, অটোরিকশাচালকদের ভাড়ার নৈরাজ্য সহ্য করতে হয়, সেই ভোগান্তি থাকবে না।

পরিবহনবিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশলের অধ্যাপক সামছুল হক বলেছেন, মেট্রোরেলের পথে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের যাত্রা আরামদায়ক, দ্রুতগতির ও নিরবচ্ছিন্ন হবে। যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারবেন। এখনকার গণপরিবহনে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.