দায়িত্ব ছাড়লেন পাপন, নতুন সভাপতি ফারুক

কখনো খেলোয়াড়দের বিষয়ে, কখনো ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড বা মন্তব্যের জন্য আলোচিত-সমালোচিত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তার দায়িত্ব ছেড়েছেন। এক যুগ পর তিনি আর এই পদে থাকছেন না।বুধবার বিসিবিকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।

আজ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিসিবির বোর্ডসভা শুরু হয় সকাল ১১টায়।  সভায় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সভার পর বিসিবির মিডিয়া উইংয়ের জাহিদ হাসান জানান, পাপনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদকে দেওয়া হয় সভাপতির দায়িত্ব।  

আজ পরিচালনা পর্ষদের ভোটেই সভাপতি মনোনীত হয়েছেন ফারুক আহমেদ। এর আগে তাকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে প্রথমে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করা হয়। পরিচালকের পদ থেকে আগেই পদত্যাগ করা জালাল ইউনুসের শূন্য স্থানে ফারুককে যুক্ত করা হয়। এরপর তিনি পরিচালনা পর্ষদের ভোটে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন।  

ফারুক এর আগে দুইবার প্রধান নির্বাচক ছিলেন।  তার প্রথম মেয়াদে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের মতো তারকাদের পথচলা শুরু হয়েছিল। তাদের নিয়ে গঠিত দল ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়েছিল। প্রথমবারের মতো উঠেছিল বিশ্বকাপের সুপার এইটেও। এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৩ সালে প্রধান নির্বাচক হন ফারুক।  এবারও বাংলাদেশ ক্রিকেট বেশ কিছু স্মরণীয় জয় পায়।  

বাংলাদেশের জার্সিতে ৭ ওয়ানডে খেলা ফারুক দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ করার আগেই ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। কারণ তিন সদস্যের নির্বাচক প্যানেল বড় করার ব্যাপারে সায় ছিল না তার। তবে দুই মেয়াদে তার সাফল্য এবং তার স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে আবারও তাকে ফেরানো হলো। এবার আরও বড় দায়িত্ব সামলাবেন তিনি।  

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে গা ঢাকা দেন বিসিবি সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। বুধবার অবশ্য অনলাইনে বিসিবির সভায় যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকার পর এটিই তার শেষ সভা হয়ে থাকলো।  পাপনের দায়িত্ব ছাড়ার মধ্য দিয়ে নতুন এক সূচনাও হলো। বিসিবি সভাপতি হিসেবে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক ক্রিকেটার দায়িত্ব নিলেন।

২০১২ সালে প্রথমবার ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। এরপর থেকে টানা দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১৩ সালের পর ২০১৭ ও ২০২১ সালে টানা তিনবার নির্বাচন করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

তার আমলে ক্রিকেট মাঠে বেশ কিছু সাফল্যও এসেছে। এর মধ্যে ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালসহ বিভিন্ন সাফল্য রয়েছে। জাতীয় দলের সাফল্য এলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন ছিল। বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্যেও সমালোচিত হয়েছেন তিনি। এবার সরকার পতনের পর দায়িত্বও ছাড়তে হলো তাকে।

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.