২৭ দফা পূরণ ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়: আমীর খসরু
‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে |ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতে ২৭ দফা ‘সরকার পতন আন্দোলনের অংশ’ উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ২৭ দফা পূরণ করা ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়, রাষ্ট্র মেরামতের কোনো কাজ করা সম্ভব হবে না। এটা অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও বিএনপির মিডিয়া সেল। এতে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ২৭ দফার বিশ্লেষণ তুলে ধরেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন। অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ পরিচালনার স্বার্থে, নিজের স্বার্থে ও জনগণের স্বার্থে এই ২৭ দফা পূরণ করতে হবে। এখানে কোনো আপস নেই। কারণ, এই ২৭ দফা না করে রাষ্ট্র চালানো যাবে না।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যের কথা বলা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, স্মার্টনেসের দুইটা অর্থ আছে। একটা হচ্ছে ভালো কাজের স্মার্টনেস, আরেকটা অর্থ হচ্ছে আপনাকে প্রফেশনালি চুরি করতে হবে; কীভাবে ব্যাংক লুট করতে হয়, তা শিখতে হবে; শেয়ার বাজার কীভাবে লুট করা যায়, শিখতে হবে; তারপরে ওই ভোট চুরি স্মার্টলি করতে হবে, কখনো দিনে কখনো রাতে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘স্মার্ট মানে হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে আপনি প্রজার মতো ব্যবহার করবেন। মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা চুরি করার স্মার্টনেস আপনার মধ্যে থাকতে হবে, ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার মতো আপনার স্মার্টনেস থাকতে হবে। আমরা সেই স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি না।’
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশ যে গভীর গর্তের মধ্যে ডুবে আছে, পড়ে আছে, সেখান থেকে বের করে আনার জন্য ২৭ দফা। ওই গর্ত থেকে আনতে পারলেই দেশ পরিচালনা করতে পারবেন।
একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা অনেক বড় বিষয় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এখানে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ করার কথা বলা হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ ১ শতাংশের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে এবং শিক্ষায় ১ শতাংশের নিচে। তার ওপরে রয়েছে দুর্নীতি। বিশ্বের যে মানদণ্ড, বাংলাদেশ প্রতিটি নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য খাতে যে খরচটা করে, তা আফগানিস্তানেরও নিচে। তাহলে বুঝতে পারছেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতের অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমীর খসরু অভিযোগ করে বলেন, ‘এখন কী হচ্ছে? এখন আমাদের দেশের অধিকার হচ্ছে মেগা প্রজেক্ট করব আর চুরি করব। মেগা প্রজেক্ট করব আর বিদেশে টাকা পাচার করব। মেগা প্রজেক্ট করব আর পাঁচটা গাড়ি চালাব। একেকটা গাড়ির দাম দুই কোটি, তিন কোটি, চার কোটি টাকা।’
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে জনসাধারণের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার ও প্রিভেন্টিভ হেলথ কেয়ারের বিষয়ে কী করবে, তার রূপরেখা গ্রাম-উপজেলা পর্যায়ে জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য ড্যাবের চিকিৎসকদের পরামর্শ দেন আমীর খসরু।
ড্যাবের ঢাকা উত্তর শাখার সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য কাদের গনি চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নবী উল্লাহ, ড্যাবের মহাসচিব আবদুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।