স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা
রাজবাড়ীর পাংশায় স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতেই বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধা আশালতা দাসকে শ্বাসরোধ ও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে প্রতিবেশী ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিশ্বজিৎ বিশ্বাস (২৪)।
বৃদ্ধা আশালতা হত্যার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে আটক ও হত্যার কারণ উদঘাটন করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের প্রেমটিয়া গ্রামের নিজ বাড়ির বারান্দা থেকে ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আশালতা দাস ওই গ্রামের মৃত সন্তোষ দাসের স্ত্রী। বিশ্বজিৎ তার প্রতিবেশী সুজিত বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, আশালতা দাসের স্বামী মারা যান ১১ বছর আগে। তার দুই মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে হয়েছে। মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি সবাই পাংশা শহরে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে আশালতা দাস একাই বসবাস করতেন। পুরাতন বাড়িতে পুকুর, মাঠের জমি ছাড়াও বাগান রয়েছে তার। আশালতা দাসের দান করা জমির ওপর এলাকায় বিদ্যালয়, হাটবাজার হয়েছে। এসব দেখাশোনা করার জন্য লোকও ছিল।
সকালে বাড়ির কাজের লোক আশালতা দাসের মরদেহ ঘরের বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ জানান, আশালতা দাস স্বর্ণালংকার পড়ে থাকতে পছন্দ করতেন। তার স্বর্ণালংকারের ওপর নজর পড়ে প্রতিবেশী ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের। কারণ, বিশ্বজিৎ দেনার দায়ে জর্জরিত ছিল। তার পরিকল্পনা ছিল আশালতা দাসের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেনা শোধ করবেন। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে আশালতা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় এলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা বিশ্বজিৎ গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে আশালতার মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে শরীর থেকে স্বর্ণালংকার খুলে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সন্দেহজনকভাবে বিশ্বজিৎকে পুলিশ আটক করলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। তার দেখানো মতে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি। এ হত্যায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।