আবাহনীর একাদশ গঠন নিয়ে বিপাকে সুজন

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সবচেয়ে শক্তিশালী দল গঠন করেছে আবাহনী। জাতীয় দলের একঝাঁক ক্রিকেটারকে নিয়ে মাঠে আধিপত্য দেখিয়ে চলেছে তারা। তবে জাতীয় দলের ক্রিকেটার কেন্দ্রিক দল গড়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। শিরোপার হাতছোঁয়া দূরত্বে থেকে লিগের শেষদিকে এসে একাদশ গঠন নিয়েই মহাসংকটে তারা। এই অবস্থায় আবাহনীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন ক্রিকেটারকে এক ম্যাচের জন্য ছেড়ে দিচ্ছে জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্ট।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য জাতীয় দলে ডাক পাওয়া আবাহনীর ১০ ক্রিকেটার হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, তানভীর ইসলাম, আফিফ হোসেন ও সাইফউদ্দিন। এদের হারিয়ে অথৈ সাগরে আবাহনী। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটি মঙ্গলবার শিরোপার লড়াইয়ে  বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে শেখ জামালের বিপক্ষে জিতলেই টানা দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পাবে।

গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে একাদশ গঠন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আবাহনী। ম্যাচের আগের দিনের অনুশীলনে নতুন ক্রিকেটারদের দেখা গেছে। বেশ কয়েকজন নতুন ক্রিকেটারকে দলে টেনেছে তারা। দলটির অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ছোট ভাই মোসাব্বের হোসেন মুনও আবাহনীর জার্সিতে আজকে অনুশীলন করেছেন। এই অবস্থায় কঠিন পরিস্থিতিতেই পড়ে গেছে দলটি।

আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন তো বলেই ফেললেন, সুযোগ থাকলে নিজেই নেমে যেতেন। সোমবার মিরপুরে অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘না আসলে ওই বয়স তো নাই। মন চায় খেলে ফেলি (হাসি)। কঠিন (খেলে ফেলা), দল করাই কঠিন এখন। ১০ জন খেলোয়াড় নেই, খালেদ (আহমেদ) আর (মাহমুদুল হাসান) জয় ইনজুরিতে। মানে ১২ জন খেলোয়াড় নেই। ৬ জন আছে, তাদের সঙ্গে আগে আমি এনেছিলাম আরও তিন জন। মানে ৯ জন আছে, ১০ জনও হয় না। দেখি আরও দুই একজনকে পাওয়া যায় কিনা। খালেদ আর জয় ইনজুরিতে না পড়লে এত সমস্যা হতো না।’
  
এদিকে জিম্বাবুয়ে সিরিজের স্কোয়াডে থাকা তিন ক্রিকেটারকে আবাহনীর এই ম্যাচের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঢাকা লিগের সুপার লিগের তৃতীয় রাউন্ডের জন্য আবাহনীর আবেদনের ভিত্তিতে ক্রিকেটারদের ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কোন তিন ক্রিকেটারকে ছাড়া হবে- সেটা জালাল প্রকাশ না করলেও আবাহনীর এক কর্মকর্তা জানান, জিম্বাবুয়ের স্কোয়াড থেকে আফিফ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও তানজীম হাসান সাকিবকে ছাড়ছে জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও সুজন  এখনও নিশ্চিত নন চট্টগ্রাম থেকে কেউ আসবেন কিনা, ‘আমি জানি না কেউ আসবে কিনা। আমি আমার মতন যেখান থেকে পারি খেলোয়াড় নিয়ে আসছি। প্রথম বিভাগ যারা খেলেছে তাদের নিতে পারবো না। একদম নন রেজিস্টার্ড খেলোয়াড় নিতে হবে। আমি রাজশাহী থেকে নিয়ে এসেছি দুজন। চেষ্টা করছি ১২-১৩ জন যোগাড় করতে।’

১৩ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে চলতি মৌসুমে আবাহনী ধরাছোঁয়ার বাইরে। সমান ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পয়েন্ট ২০। পরের তিন ম্যাচে তারা জিতলে এবং আবাহনী সবকটিতে হারলে দুই দলের পয়েন্ট হবে ২৬। তখন হেড টু হেড হিসেব আসবে। দুই দল একটি করে ম্যাচ জেতায় হেড টু হেডও সমান হবে। কিন্তু রান রেটে অনেক এগিয়ে আবাহনী। সব মিলিয়ে আবাহনীর শিরোপা অনেকটাই নিশ্চিত বলা চলে।

সুপার লিগের বাকি তিন ম্যাচের আগে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে যাওয়ায় চাপ তৈরি হয়েছে আবাহনী শিবিরে। তারপরও মাঠের লড়াইয়ে সেরাটা দিতে মুখিয়ে আবাহনীর এই কোচ, ‘যখন আপনি শেখ জামাল আর মোহামেডানের বিপক্ষে খেলবেন কঠিন তো বটেই। কাগজে কলমে এখন (১০ খেলোয়াড় চলে যাওয়ায়) তারা আমাদের থেকে শক্তিশালী। আমি উদ্বিগ্ন না, লড়াই করবো।’

সুজন আরও যোগ করেছেন, ‘ইচ্ছা ছিল অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হবো। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’  

Sign up for the Newsletter

Join our newsletter and get updates in your inbox. We won’t spam you and we respect your privacy.